নিজস্ব প্রতিবেদক // বরিশাল পিরোজপুরের নেছারাবাদে ২৮ দিনের সন্তানকে পুকুরে ফেলে হত্যার দায়ে মো. জাকির হোসেন বয়াতী (৪১) নামে এক ব্যক্তির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও পাঁচ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে পিরোজপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহা. মহিদুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত জাকির হোসেন বয়াতী বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার তারিকাটা গ্রামের মো. চাঁন মিয়া বয়াতীর ছেলে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, জাকির হোসেন বয়াতী দীর্ঘদিন ধরে পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার গোবিন্দগুহকাঠী গ্রামের আকন বাড়ি জান্নাতুল ফেরদৌস জামে মসজিদের ইমামের দায়িত্ব পালন করছিলেন। সে সুবাদে ওই মসজিদের পাশের বাড়ির হনুফা বেগমের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০১৬ সালে হনুফা বেগম ও জাকির বিয়ে করেন। দুজন ঢাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন। তবে তাদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক চলছিল না।
হনুফা বেগম সন্তান সম্ভবা হলে পিরোজপুরের নেছারাবাদ বাবাবাড়িতে চলে যান। ২০১৮ সালের জুন মাসে তাদের একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। সন্তানকে দেখতে ২০১৮ সালের ৫ আগস্ট জাকির হোসেন শ্বশুরবাড়িতে আসেন। রাতে জাকির স্ত্রী হনুফাকে শরীর ভালো থাকবে এমন কথা বলে দুটি সাদা রঙের ওষুধ খেতে দেন। এরপর তারা ঘুমিয়ে পড়েন। পরদিন ভোর ৬ টার দিকে হনুফা বেগমের মা তাদের ডাকতে এসে হনুফা বেগমকে অজ্ঞান অবস্থায় পান ও জাকির হোসেন ও কন্যা শিশুকে দেখতে খুঁজে পাননি।
৭ আগস্ট দুপুর ২টার দিকে তাদের বাড়ির পুকুরে হনুফা বেগমের চাচি মাসুদা বেগম ওই শিশুটিকে মৃত অবস্থায় ভাসতে দেখেন। ১৬ আগস্ট শিশুটির মা হনুফা বেগম বাদী হয়ে নেছারাবাদ থানায় জাকিরকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে আদালত আজ এ রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) সরদার ফারুক আহমেদ বলেন, গ্রেফতারের পর জাকির হোসেন বয়াতী শিশুটিকে হত্যার কথা স্বীকার করেন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও প্রমাণাদি দেখে আদালতের বিচারক জাকিরের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। পাশাপাশি ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও পাঁচ মাসের কারাদণ্ড দেন।